Get it on Google Play
Download on the App Store

তুমি মোর জীবনের মাঝে

তুমি মোর জীবনের মাঝে
মিশায়েছ মৃত্যুর মাধুরী।
চিরবিদায়ের আভা দিয়া
রাঙায়ে গিয়েছ মোর হিয়া,
এঁকে গেছ সব ভাবনায়
সূর্যাস্তের বরনচাতুরী।
জীবনের দিক্‌চক্রসীমা
লভিয়াছে অপূর্ব মহিমা,
অশ্রুধৌত হৃদয়-আকাশে
দেখা যায় দূর স্বৰ্গপুরী।
তুমি মোর জীবনের মাঝে
মিশায়েছ মৃত্যুর মাধুরী।

তুমি ওগো কল্যাণরূপিণী,
মরণেরে করেছ মঙ্গল।
জীবনের পরপার হতে
প্রতি ক্ষণে মর্তের আলোতে
পাঠাইছ তব চিত্তখানি
মৌনপ্রেমে সজলকোমল।

মৃত্যুর নিভৃত স্নিগ্ধ ঘরে
বসে আছ বাতায়ন-’পরে,
জ্বালায়ে রেখেছ দীপখানি
চিরন্তন আশায় উজ্জ্বল।
তুমি ওগো কল্যাণরূপিণী,
মরণেরে করেছ মঙ্গল।

তুমি মোর জীবন মরণ
বাঁধিয়াছ দুটি বাহু দিয়া।
প্রাণ তব করি অনাবৃত
মৃত্যু-মাঝে মিলালে অমৃত,
মরণেরে জীবনের প্রিয়
নিজ হাতে করিয়াছ, প্রিয়া?
খুলিয়া দিয়াছ দ্বারখানি,
যবনিকা লইয়াছ টানি,
জন্মমরণের মাঝখানে
নিস্তব্ধ রয়েছ দাঁড়াইয়া।
তুমি মোর জীবন মরণ
বাঁধিয়াছ দুটি বাহু দিয়া।

২৯ অগ্রহায়ণ ১৩০৯

বোলপুর। শান্তিনিকেতন

স্মরণ

Rabindranath Tagore
Chapters
আজিকে তুমি ঘুমাও, আমি জাগিয়া রব দুয়ারে ভালো তুমি বেসেছিলে এই শ্যাম ধরা আজি প্রভাতেও শ্রান্ত নয়নে আপনার মাঝে আমি করি অনুভব আমার ঘরেতে আর নাই সে যে নাই এ সংসারে একদিন নববধূবেশে এসো বসন্ত এসো আজ তুমি ঘরে যবে ছিলে মোরে ডেকেছিলে ঘরে জ্বালো ওগো জ্বালো ওগো সন্ধ্যাদীপ জ্বালো তখন নিশীথরাত্রি; গেলে ঘর হতে এসো বসন্ত এসো আজ তুমি তুমি মোর জীবনের মাঝে তোমার সকল কথা বল নাই, পার নি বলিতে দেখিলাম খানকয় পুরাতন চিঠি পাগল বসন্তদিন কতবার অতিথির বেশে প্রেম এসেছিল, চলে গেল সে যে খুলি দ্বার বজ্ৰ যথা বর্ষণেরে আনে অগ্রসরি বহুরে যা এক করে, বিচিত্রেরে করে যা সরস মিলন সম্পূর্ণ আজি হল তোমা-সনে মৃত্যুর নেপথ্য হতে আরবার এলে তুমি ফিরে যত দিন কাছে ছিলে, বলো, কী উপায়ে যে ভাবে রমণীরূপে আপন মাধুরী বহুরে যা এক করে, বিচিত্রেরে করে যা সরস সংসার সাজায়ে তুমি আছিলে রমণী সে যখন বেঁচে ছিল গো তখন স্বল্প-আয়ু এ জীবনে যে-কয়টি আনন্দিত দিন হে লক্ষ্মী, তোমার আজি নাই অন্তঃপুর